হাজার বছরের ওপর হয়ে গেল ইসলাম প্রচারকদের দেয়া শান্তির ইসলাম দিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষেরা ইসলামি জীবন কাটিয়েছেন, কারো সাধ্য হয়নি এ-কথা
বলার যে তাঁরা মুসলমান ছিলেন না বা কারো চেয়ে কম মুসলমান ছিলেন। তাঁরা নিজেরাও কখনো বলেননি বৃটিশের রাজত্বে মুসলমান থাকতে তাঁদের কোন অসুবিধে হয়েছে। কিন্তু এখন বাংলায় এক নূতন ধরণের ইসলাম শক্তভাবে ঘাঁটি গেড়েজার বছরের ওপর হয়ে গেল ইসলাম প্রচারকদের দেয়া শান্তির ইসলাম দিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষেরা ইসলামি জীবন কাটিয়েছেন, কারো সাধ্য হয়নি এ-কথা বলার যে তাঁরা মুসলমান ছিলেন না বা কারো চেয়ে কম মুসলমান ছিলেন। তাঁরা নিজেরাও কখনো বলেননি বৃটিশের রাজত্বে মুসলমান থাকতে তাঁদের কোন অসুবিধে হয়েছে। কিন্তু এখন বাংলায় এক নূতন ধরণের ইসলাম শক্তভাবে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। এর অনুসারীরা বিশ্বাস করেন ইসলামি রাষ্ট্র না হলে পুরোপুরি ইসলাম পালন করা যাবে না, ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতেই সব নবী-রসুলেরা দুনিয়ায় এসেছিলেন, রাজনীতি হল ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, শারিয়া-আইন হল ইসলামের প্রাণ, শারিয়া-আইন প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক চেষ্টা না করলে আলাহ্ে ক খুশী করার “আর কি উপায় আছে আমি জানি না” (মওলানা মওদুদি) ইত্যাদি।
এই ইসলাম এবং আমাদের হজরত নিজামুদ্দীন আওলিয়া, মঈনুদ্দীন চিশতি, শাহজালাল, শাহ মখদুম, শাহ পরাণ, হাজী দানেশমন্দ বায়েজীদ বোস্তামীর ইসলামের নাম এক হলেও এ-দু’টো সম্পূর্ণ দুই ধরণের ইসলাম–এদের মধ্যে সংঘর্ষ আছে। একটা শারিয়া-ভিত্তিক ; অন্যটায় শারিয়া, রাষ্ট্র, ফতোয়া এ-সব নেই। সুফি-ইসলামের অনেক কিছুকেই শারিয়া-ইসলাম অনৈসলামিক ও ইসলাম-বিরোধী মনে করে। সে-জন্যই শারিয়া-ইসলাম সুফি-ইসলামকে আঘাত করে এবং শক্তি পেলেই সে সুফি-ইসলামকে উচ্ছেদ করে দেবে। এ নিয়ে আলোচনা করা দরকার কারণ যা কিছু দিয়ে জীবন নিয়ন্ত্রিত হয় সে-সব নিয়ে ক্রমাগত আলোচনার দরকার আছে যেমন ওষুধ, দ্রব্যমূল্য, রাষ্ট্র, আইন, অপরাধ, শাস্তি, আদালত, খাদ্য-ওষুধে ভেজাল ইত্যাদি।
কারণ এ-গুলো দিয়ে জীবন মানবাধিকার রক্ষা হয় অথবা ধ্বংস হয়। মানবাধিকার তো কোন দর-কষাকষির ব্যাপার নয়, এমনকি ধর্মের নামেও নয়। তাই প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব দুনিয়ার যে-কোন জায়গার অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। যে-কোন জায়গায় অন্যায় হলে তা সর্বত্র ন্যায়ের ওপর হুমকি। তাই আমরা বাংলাদেশে বসে প্যালেস্টাইন, কাশ্মীর, চেচনিয়া, গুজরাটের মুসলিম-নিধনের প্রতিবাদ করি, আফগানিস্তান-ইরাকে আমেরিকা-বৃটেনের হামলা-গণহত্যার প্রতিবাদ করি।
অন্যান্য ধর্মের মত ইসলামের নামেও কিছু অত্যাচার চিরকালই হয়েছে তা সবাই স্বীকার করেন। ভুলটা করেছে মানুষ, আর তার দায় পড়েছে ইসলামের ওপর। দলিল জানা নেই বলে সাধারণ মানুষ এ-অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে পারেন না। তাই আমি মূল ইসলামি কেতাব থেকে দু’পক্ষের কিছু দলিল দেখাব যাতে জনগণের মনে বিশ্বাসের শক্তি দৃঢ় হয়। মনে রাখতে হবে, “মানুষ তার স্রষ্টাকে তুষ্ট করতে যত সার্বিকভাবে ও যত উলাে সর সাথে মানুষের ওপর নিষ্ঠুরতা করেছে ততটা সে অন্য কোন কারণে করেনি” (প্যাস্কেল “?”). ভারতের মন্দির-রাষ্ট্র, , ইউরোপের গীর্জা-রাষ্ট্র তার উদাহরণ। এইসব “স্রষ্টার সৈন্যেরা” কখনোই মানবতার ডাকে সাড়া দেয়নি, অত্যাচারিতের ব্যথা বোঝেনি। ওদেরকে সর্বদাই রাষ্ট্রীয় আইন ও গণরোষের কালবৈশাখী দিয়ে উৎখাত করতে হয়েছে। বাংলার ঈশানে সেই কালবৈশাখীর মেঘ এখন দ্রুত ঘনায়মান। তাই এ-ব্যাপারে দলিলগুলো দেখার দরকার আছে ॥