অনেকে বলেন শারিয়া অতীতে ন্যায়ভিত্তিক বিচার-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। কথাটা ঠিক নয়, ও-আইনে ন্যায় বিচার হওয়া সম্ভব নয়। ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের প্রধান কাজই হল অন্য ধর্মের লোকদের চেয়ে নিজ ধর্মের অনুসারীদেরকে বেশি অধিকার ও সুবিধে দেয়া। না হলে সেটা ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রই হয় না। ফিলিস্তিনীরা কি ইসরাইলে সমান অধিকার পেতে পারে ? পারে না। ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হলে হিন্দুরা মুসলমানদের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবেই। শারিয়া আইনে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার বানিয়ান-এ অবস্থিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ বুদ্ধমূর্তি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ও অমুসলিম নাগরিকদেরকে কপালে হলুদ পট্টি বাঁধতে বাধ্য করেছিল যাতে রাস্তায় মুসলিম-অমুসলিম চেনা যায়। গুজব উঠেছিল ইরাণ সরকারও নাকি এ-আইন চালু করতে যাচ্ছে, পরে অবশ্য সেটা হয়নি (বিশ্ববিখ্যাত সাংবাদিক আমির তাহেরী)। মুসলিম বিশ্ব পরের দিকে আমেরিকার ভয়ে তালেবানদের প্রচণ্ড নিন্দা করে বলেছে এগুলো ইসলাম-বিরোধী কাজ। কিন্তু সহজ সরল পাহাড়ী তালেবানদের বুকে এত পাটা নেই যে ইচ্ছেমত ইসলামের নামে নতুন কিছু করবে। ওরা সরল অন্ধবিশ্বাসে সে আইনই প্রয়োগ করেছে যা হাদিস বা শারিয়ায় আছে। বুদ্ধমূর্তি ভাঙার নির্দেশটা সহি বুখারিতেই আছে (হাদিস নং ২৭০, পৃঃ ১০০, মওলানা আবদুল জলিলের বাংলা অনুবাদ)।
অমুসলিমদের কপালে হলুদ পট্টির আইন আছে ‘ওমর’স প্যাক্ট’-এ। তালেবানদের দেখাদেখি ভারতে হিন্দুরা কিংবা ইসরাইলে ইহুদীরা কিংবা পশ্চিমে খ্রীষ্টানরা আমাদের কপালে হলুদ পট্টি লাগিয়ে দিলে আমাদের কি ভয়ানক অবস্থা হবে আর তার জন্য দায়ী কে হবে ? আমরা ওদের ওপরে আমাদের আইন চাপাব, আর ওরা আমাদের ওপরে ওদেরটা চাপাতে পারবে না, এ দাবিই বা করি কি করে ? তালেবানরা হয়ত খতিয়ে দেখেনি ক্ষমতার লড়াইয়ে নিজেদের কুকীর্তিকে হালাল করার জন্য এ-সব দলিল বানিয়েছে পরবর্তী খলিফারা। কেননা অমুসলিমের প্রতি হজরত ওমরের সাম্যবাণী ইতিহাসে মশহুর হয়ে আছে যখন তিনি জেরুজালেম অধিকার করেছিলেন। এমনকি তিনি এক গরিব অমুসলিম গোত্রকে জিজিয়া কর থেকেও রেহাই দিয়েছিলেন। তাই ওই ‘ওমর’স প্যাক্ট’-এ আমরা বিশ্বাস করি না। কিন্তু ওটাই বহু জায়গায় প্রয়োগ হয়েছে।
“খলিফা” নামধারী গণহত্যাকারীদের হাতে ইসলাম পড়লে কি সর্বনাশ হয়, ইমাম গাজ্জালী থেকে তার উদ্ধৃতি দিয়েছেন মওলানা মওদুদি ঃ “বাদশাহদের প্রায় সব জমিজমা ও প্রাসাদ (রিয়েল এস্টেট) অবৈধভাবে অর্জিত। কাহারো উচিত নহে এসব সুলতানকে মুখ দেখানো বা তাহাদের মুখ দেখা। তাহাদের অত্যাচারের জন্য তাহাদিগকে ঘৃণা করা উচিত, তাহাদের অস্তি ত্বকেই নিন্দা করা উচিত, তাহাদের প্রশংসা করা উচিত নহে…তাহাদের রাজপ্রাসাদ ও সাজ- পোশাককে নোংরা ও অনৈসলামিক ঘোষণা করা উচিত”… তিনি সকল মন্ত্রীদিগকে চিঠিতে লেখেন যে, − “স্বৈরতন্ত্রের অত্যাচার সকল সীমা অতিক্রম করিয়াছে। আমি এইস্থান ত্যাগ করিয়া যাইতেছি যাহাতে স্বৈরতন্ত্রের এই নিষ্ঠুর ও নির্লজ্জ কর্মকাণ্ড আমাকে দেখিতে না হয়”
− (এ শর্ট হিস্ট্রি অব্ দ্য রিভাইভালিস্ট মুভমেণ্ট ইন্ ইসলাম − পৃষ্ঠা ৬২-৬৩)।
ইমাম গাজ্জালীর ইসলামি ব্যাখ্যার সাথে অনেকের দ্বিমত থাকতেই পারে এবং ছিলও, কিন্তু খলিফাদের অত্যাচারে তাঁর হৃদয়ের বেদনা এতে ফুটে উঠেছে। বস্তুত প্রায় প্রতিটি ইমামই এই কষ্ট নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন যে, ইসলামের নামে যা চলেছে তা ইসলাম নয়। নেতাদের প্রতি আহ্বান রইল তাঁরা যেন কোনকিছু না লুকিয়ে জাতিকে প্রকৃত ইতিহাস শেখান। এটা আমাদেরই ইতিহাস, এর মুখোমুখি না হয়ে উপায় নেই আমাদের। মুসলিম-সভ্যতার যা বিপুল অর্জন তা সেই কৌতূহলী, মানবদরদী এবং মেধাবী বৈজ্ঞানিকদের উপহার এখনো দুনিয়ার বৈজ্ঞানিকেরা স্মরণ করেন কৃতজ্ঞতার সাথে। এর সাথে মুসলিম খেলাফতের যোগ সামান্যই, হাতেগোনা দু’একজন জ্ঞানপিপাসু খলিফা ছাড়া।
অতীতে শারিয়া নারী-অধিকার রক্ষা করেছিল একথাও ঠিক নয়। এ বইয়ের শেষে আইনগুলোর উদাহরণ দেখলেই বোঝা যাবে ওগুলো দিয়ে ন্যায়বিচার সম্ভব নয়। অসংখ্য আইন ও মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে ডঃ আমিরা আজহারি তাঁর ‘উইমেন, দ্য ফ্যামিলি অ্যাণ্ড ডিভোর্স ল’জ ইন ইসলামিক হিস্ট্রি’ বইতে দেখিয়েছেন অতীতেও শারিয়া-রাষ্ট্রে মুসলিম নারীর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এমনকি তাঁদের ন্যায্য অধিকার ছেড়ে দেবার জন্য শারিয়া কোর্ট নতুন এক কোরাণ-বিরোধী ফর্ম বানায় যাতে নারীরা বাধ্য হয়ে সই করত। উদাহরণ দিচ্ছি ঃ “…তালাকের পর মোহর আদায় করা স্ত্রীদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য ছিল…সতেরো ও আঠারো শতাব্দীতে প্রচুর খুলা হইত। খুলা পদ্ধতিতে স্ত্রীকে যে কোন প্রাপ্য, এমনকি স্ত্রীর নিজের ও সন্তানদের ভরণপোষণও পরিত্যাগ করিতে হইত। এই জন্য খুলার দলিলে এক অতিরিক্ত কাগজ সংযোজিত করা হয়। উহাতে সন্তানদের নাম, পিতার নাম ও সন্তানদের খরচের ব্যাপারে (স্বামীর দায়িত্ব নাই, এই ব্যাপারে) স্ত্রীর স্বীকৃতির কথা লিখা থাকে। ভিদিন অঞ্চলের হাওয়া খাতুন ১৭৮৩ সালে স্বামীকে খুলা-তালাক দেয়। তাহাকে মোহরের ৪০০০ অ্যাক্সেসের (তৎকালীন তুর্কী টাকা) অপরিশোধিত ১০০০ অ্যাক্সেস এবং ভরণপোষণের অর্থ পরিত্যাগ করিতে হয়…। জুলাই ১৮০২ − ইস্তাম্বুলের হালিমা খাতুন আসিয়া দাবি করিল যে মোহর পরিত্যাগ করিবার জন্য তাহার স্বামী আহমেদ তাহাকে খুলার জন্য চাপ দিতেছে…। দুর্নীতিপরায়ণ কাজি-রা ষড়যন্ত্র করিত ও ঘুষ খাইত” (পৃঃ ৮৯, ৯২, ১০০, ১০৪, ইত্যাদি)।
যে শারিয়া মুসলমানের মধ্যেই ভিনড়বমত সহ্য করতে পারে না সে অমুসলমানদের সাথে কি ব্যবহার করেছে সেটা আমরা পাব নীচের আইনগুলোতে ঃ
১। “শারিয়া কোর্টর জজকে হইতে হইবে মুসলমান। তবে অভিযুক্ত যদি হয় অমুসলিম তবে জজ অমুসলিম হইতে পারে” (পেনাল ল’ অব্ ইসলাম ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় হুদুদ আইন, ১৯৭৯-এর ৭, ১৯৮০-এর ২০ দ্বারা সংশোধিত, আইন নং ২১) ; ক্রিমিন্যাল ল’ ইন ইসলাম অ্যাণ্ড দ্য মুসলিম ওয়ার্লড, পৃঃ ৪৪৮)।
২। পেনাল ল’ অব্ ইসলাম, পৃঃ ১৪৯ ও পৃঃ ৪৭ ঃ “ধর্মের পার্থক্যকেও হিসাবে ধরিতে হইবে, কোন অবিশ্বাসীকে হত্যা করিবার জন্য কোন মুসলমানের প্রাণদণ্ড হইবে না …কোন অবিশ্বাসী যাহাকে মিথ্যা সাক্ষ্য দিবার জন্য শাস্তি দেওয়া হইয়াছে (এবং তার সাক্ষ্য ভবিষ্যতে আর নেয়া হবে না) সে যদি পরে মুসলমান হইয়া যায় তবে তাহার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য।”
৩। মুসলিম পুরুষের রক্তমূল্য অপেক্ষা ঃ (১) মুসলিম নারীর রক্তমূল্য অর্ধেক, (২) ইহুদী-খ্রীষ্টানের রক্তমূল্য তিনভাগের একভাগ, ও (৩) অগিড়ব-উপাসকের (সম্ভবত হিন্দুদেরও − লেখক) রক্তমূল্য পনেরো ভাগের একভাগ (শাফি’ই আইন পৃঃ ৫৯০, Law #o.4.9)।
৪। “ইসলামিক উম্মা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করিবার পর … রাষ্ট্র পরিচালনায় অমুসলিমদের অধিকার অস্বীকার করিবে … অমুসলিম নারীদিগকে পোশাকের ব্যাপারে শারিয়ায় বর্ণিত সর্বনিু ভব্যতা মানিয়ে চলিতে বাধ্য করিবে … সিনেমার উপরে বিধিনিষেধ লাগাইবে … অমুসলিমদের এমন কোন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করিতে দিবে না যাহা ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষতিকর” (জিহাদ ইন ইসলাম, মওলানা মওদুদি পৃঃ ২৭)। বলা বাহুল্য, কোন্ কাজটা ‘ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষতিকর’ তা শারিয়াপন্থীরাই ঠিক করবেন।
৫। “যাহারা ইহার (শারিয়া-রাষ্ট্রের) পথনির্দেশ ও পরিকল্পনা মানে না তাহাদিগকে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতিমালা প্রণয়নের ব্যাপারে কোন অধিকার দেওয়া হইবে না … পরিপূর্ণ মুসলমানের এলাকায় অমুসলমানেরা অতীতে নির্মিত আরাধনার স্থানগুলি পুনর্নির্মাণ বা মেরামত করিতে পারিবে কিন্তু তাহাদিগকে নূতন কোন আরাধনা-গৃহ নির্মাণ করিতে দেওয়া হইবে না … জিম্মিদিগকে (অমুসলিম) দেশরক্ষার দায়িত্ব হইতে নিষ্কৃতি দেওয়া হইয়াছে … যুদ্ধে যাইবার মত সমর্থ অমুসলিমের নিকট হইতে কর নেওয়া হইবে” (মওলানা মওদুদি − ইসলামিক ল’ অ্যাণ্ড কন্সটিটিউশন, পৃঃ ১৪৬, ২৮৮, ও ২১১)।
৬। “হালাকু খান যখন মওলানাদের জিজ্ঞাসা করিল, ন্যায়বিচারী অমুসলিম রাজা আর অন্যায়কারী মুসলিম রাজার মধ্যে কে বেশি গ্রহণযোগ্য, তখন তাহারা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় প্রমটিকে (ন্যায়বিচারী অমুসলিম রাজাকে) সমর্থন করিল। এই ঘটনা হইতেই ঐ সময়ের ধর্মীয় নেতৃত্বের অবস্থা (অর্থাৎ ইসলামি মওলানাদের ‘অধঃপতন’) বোঝা যায়” (এ শর্ট হিস্ট্রি অফ দ্য রিভাইভ্যালিস্ট মুভমেণ্ট ইন্ ইসলাম − মওলানা মওদুদি − ৬৫ পৃষ্ঠায় ফুটনোট)।
৭। এবারে দেখুন এই অসাম্য প্রতিষ্ঠিত করতে কিভাবে হজরত ওমরকেও ব্যবহার করা হয়েছে। উদ্ধৃতি ঃ “ইবনে আবী হাতেম বর্ণনা করেন যে, হজরত ওমর ফারুক (রাঃ)-কে বলা হলো যে, এখানে একজন হস্তলিপিতে সুদক্ষ অমুসলিম বালক রয়েছে। আপনি তাকে ব্যক্তিগত মুন্সী হিসেবে গ্রহণ করে নিলে ভালোই হবে। হজরত ওমর ফারুক (রাঃ) উত্তরে বলেন, “এরূপ করলে মুসলমানদের ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীকে বিশ্বস্ত রূপে গ্রহণ করা হবে, যা কোরআনের নির্দেশের পরিপন্থী” (পৃঃ ১৯৮, বাংলা কোরাণ − মুহিউদ্দীন খান)।
আপনারা নিশ্চয় খেয়াল করেছেন এ-বইতে আমি বেশির ভাগ দলিল দেখাচ্ছি বিখ্যাত শারিয়া-সমর্থক বিশেষজ্ঞদের থেকেই। এতে পাঠক বুঝবেন সত্যি সত্যিই শারিয়া আইনে মহা সমস্যা আছে। আসলে চার রকম শারিয়া আইনের উদ্ভব হওয়ার সাথে সাথে মানুষের যা স্বভাব তাই হয়েছিল, বিভিনড়ব মজহাবের অনুসারীদের মধ্যে প্রচণ্ড বিরোধীতা শুরু হয়েছিল। সবাই বলত তারটাই ঠিক, অন্যরা মিথ্যা এবং ইসলাম নষ্ট করছে। ইউরোপের বিখ্যাত শারিয়া-সমর্থক বিশেষজ্ঞ বিলাল ফিলিপ-এর বই ‘দি এভল্যুশন অব্ ফিক্হ্’-এর ১০৭ ও ১৩৯ পৃষ্ঠা থেকে সংক্ষেপে উদ্ধৃতি দিচ্ছি ঃ “এইভাবে ইসলাম ধর্মটি চার মজহাবের মধ্যে সীমাবদ্ধ হইয়া পড়িল। কেহ এই মজহাবের কোনোটিকেও না মানিলে তাহাকে ইসলাম-ত্যাগী ধরা হইত। এই অতিরিক্ত রক্ষণ-প্রবণতা এতদূর গিয়াছিল যে কোনো এক মজহাব ছাড়িয়া অন্য মজহাবের অনুসারী হইলে তাহার শাস্তি হইতে পারিত। হানাফি মজহাবে শাফি- অনুসারীদের সহিত বিবাহ নিষিদ্ধ করিয়া আইনও করা হইয়াছিল।”
বইটার ১০৬ পৃষ্ঠায় ১৮৮৪ সালের একটা মারাত্মক ছবি আছে যা আমার এ-বইতে দেবার খুব ইচ্ছে ছিল কিন্তু তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তাঁর লিখিত অনুমতি ছাড়া কেউ যেন সে-বইটির কোনকিছু ব্যবহার না করে (এটি অনেক লেখকই করেন যদিও ছোটখাটো উদ্ধৃতিতে অসুবিধে নেই)। ছবিটা হল, কাবা শরীফের আঙিনায় চার কোণায় চারটি ছোট ছোট ঘর। তিনি বলছেন, “এক মজহাবের অনুসারীরা অন্য মজহাবের ইমামের পেছনে নামাজ পর্যন্ত পড়িত না। এজন্য মসজিদের ভিতরে নামাজ পড়ার আলাদা জায়গা করা হইয়াছিল। কাবা ঘর পর্যন্ত বাদ যায় নাই। প্রত্যেক মজহাবের ইমামের জন্য কাবার চারিপাশে পৃ ক চারটি মঞ্চ বানানো হইয়াছিল। আশ্চর্য যে, কাবা’র চারিপাশে এই পৃ ক নামাজের জায়গা বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত অক্ষত ছিল। বাদশাহ আবদুল আজিজ ইবনে সৌদি (সৌদি আরব ও সৌদী বাদশাহীর প্রতিষ্ঠাতা) ১৯২৪ সালের অক্টোবরে মক্কা বিজয় করিয়া মজহাব নির্বিশেষে একই ইমামের পিছনে নামাজে সব মুসলিমকে একত্রিত করেন।”
এই হলো অবস্থা। অর্থাৎ শারিয়া আইন চোদ্দশ’ বছরের মধ্যে তেরোশ’ বছরই মুসলিম সমাজকে বিভক্ত করে রেখেছিল। কতখানি বিভক্ত করে রেখেছিল ? ইমাম মালিকের সমর্থকরা ইমাম শাফি’কে এত মর্মান্তিকভাবে প্রহার করেছিল যে তাতেই তিনি কয়েকদিন পরে মৃত্যুবরণ করেন − চার ইমামের ওপরে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য কেতাবের একটা “দ্য র্ফো ইমাম্স্” − আবু যাহরা, পৃঃ ২৭৩। এ-বইটা দুনিয়ার সর্বোচ্চ গবেষকেরা সূত্র হিসেবে ব্যবহার করেন, যেমন হাসান বানড়বা’র নাতি ডঃ তারিক রামাদান ॥